সড়কের ইট তুলে ঠিকাদার উধাও, ভোগান্তিতে ২০ গ্রামের মানুষ
রনি হোসেন, কেশবপুর
কেশবপুর উপজেলার গড়ভাঙ্গা বাজার হতে নেহালপুর সড়কের আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দের রাস্তা কাজ ফেলে রেখে ঠিকাদার উধাও হয়ে গেছে। নয় মাস ধরে বন্ধ রয়েছে সড়ক সংস্কার কাজ। সড়কের দু'পাশে ঘেরের ভেড়ি বাঁধের কারণে খুড়ে রাখা সড়কে সবসময় হাটু পানি জমে থাকায় দুই উপজেলার শত শত পথচারীদের প্রায় ১৫ কিলোমিটার ঘুরে কেশবপুর শহরে আসতে হচ্ছে। ফলে যাতায়াতে জনগণকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
জানা গেছে, কেশবপুর উপজেলার গড়ভাঙ্গা বাজার থেকে বিলের মধ্য দিয়ে বাটবিলা পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার ইটের সোলিং করা রাস্তা ছিল। এ সড়ক দিয়ে কেশবপুর উপজেলার গড়ভাঙ্গা, মাদারডাঙ্গা, বেলকাটি, বাকাবর্শী, পাাঁজিয়া, কেশবপুরসহ ২০/২৫ গ্রামের জনগণ চলাচল করে। অপরদিকে, মনিরামপুর উপজেলার বাটবিলা, দূর্বাডাঙ্গা, হরিনা, শ্যামনগর, নেহালপুর, বালিধা, নওয়াপাড়াসহ ১৫/২০ গ্রামের জনগণ সড়ক দিয়ে চলাচল করে থাকে। বন্যার হাত থেকে ঘের রক্ষায় ১০/১৫ বছর আগে গড়ভাঙ্গা বিলের ঘের মালিক সেলিমুজ্জামান আসাদ ও কামরুল ইসলাম বিশ্বাস রাস্তার দুপাশে ৩/৪ ফুট উঁচু করে ঘেরের বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে। এরপর থেকে সড়কটিতে সবসময় হাটু পানি জমে থাকতো। ফলে দুই উপজেলার হাজার হাজার মানুষের চলাচলে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হতো। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন নিবেদন করে আসছে। জনগণের দীর্ঘ দিনের দাবির প্রেক্ষিতে ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে সড়কটি সংস্কারে ২ কোটি ৫২ লাখ ৮৬ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। সর্বনিন্ম দরদাতা হিসেবে কাজটি পান যশোরের বনান্তর ট্রেডিং লিমিটেডের সত্ত্বাধিকারী ঠিকাদার আবু সাইদ।
এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৪ অক্টোবর ঠিকাদার আবু সাইদ সড়কের কাজ শুরু করেন। ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী ২০২৪ সালের ১ এপ্রিল সংস্কার কাজ শেষ করার কথা। ৯ মাস আগে সড়কটির ইটের সোলিং তুলে গর্ত করে খুড়ে সড়কের দুপাশে খোয়া ভেঙে রেখে ঠিকাদার উধাও হয়।
গড়ভাঙ্গা গ্রামের জিনায়েত আলী জানান, সড়কটি ঘেরের বেড়িবাঁধের সমান উঁচু করে করার কথা। সড়কের দুই পাশে মাছের ঘের থাকায় হাটু পর্যন্ত পানি জমে জনগণের যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। স্থানীয় চাকুরিজীবী, ব্যবসায়ীদের প্রায় ১০ কিলোমিটার ঘুরে কেশবপুরে আসতে হয়। রাস্তায় পানি জমে থাকায় বাসিন্দাদের ধান মাড়াই, বাজার সওদা, জরুরী চিকিৎসা সেবা নিতে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। যে কারণে জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটির সংস্কার কাজ দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করা খুবই জরুরী।
এ ব্যাপারে উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম বলেন, রাস্তায় পানি, দুপাশে মাছের ঘের থাকায় যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে। ঠিকাদার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে ব্যর্থ হওয়ায় তার আবেদনের প্রেক্ষিতে কাজের মেয়াদ ২০২৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ঠিকাদারকে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : আবুল বাশার, নির্বাহী সম্পাদক: মীর মোশাররফ হোসেন, বার্তা সম্পাদক : মেহেদী হাসান রিপন
সতর্কীকরণ : এই পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি ।