1. admin@dailyjessorerkontho.com : admin :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১২ অপরাহ্ন

সেচ্ছাসেবীরা যুবশক্তির অনূপ্রেরণা-পরিমল বিশ্বাস

দৈনিক যশোরের কণ্ঠ
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ১৭ বার পঠিত

মেহেদী হাসান রিপন,বার্তা সম্পাদকঃ পারিশ্রমিক ছাড়া কোনো সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত থেকে অথবা ব্যক্তিগতভাবে কাজ করাই হলো স্বেচ্ছাসেবা।এটি হওয়া চাই স্বপ্রণোদিত।মহাত্মা গান্ধী বলেছিলেন, নিজেকে খুঁজে পাওয়ার সেরা উপায় হলো অন্যের সেবায় নিজেকে হারিয়ে দেওয়া।সেচ্ছাসেবীরা যুবশক্তির অনুপ্রেরণা ও যুবসমাজের গর্ব ওঠো জাগো এবং লক্ষ্যে পৌঁছানো পর্যন্ত থেমো না”স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজে জড়িত হাজারো ব্যক্তি শুধু অন্যের মুখে হাসি ফোটাতে বিনে পয়সায় কাজ করে যাচ্ছেন দিনের পর দিন। তারা এসব করেন একান্তই নিজের নিরেট আত্মতৃপ্তি এবং আনন্দের জন্য। স্বেচ্ছাসেবাতে এমন এক ধরনের অনুভূতি আর আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায়, যা শুধু এই কাজে সংশ্লিষ্ট মানুষই অনুধাবন করতে পারেন। কেউ কাউকে সাহায্য করার পর সাহায্যপ্রাপ্ত অসহায় মুখগুলো যে ধন্যবাদ জানায়, সেটা একান্ত মনের ভেতর থেকে আসে। এই নির্ভেজাল ভালোবাসাই স্বেচ্ছাসেবকদের জীবনের পরম আত্মতৃপ্তি।

স্বেচ্ছাসেবকরা সমাজে সহযোগিতার বীজ বুনে শুধু সমাজকেই সুখী করে না বরং নিজেরাও লাভ করেন অনাবিল সুখ। যে সুখ অর্থ দিয়ে ক্রয় করা অসম্ভব। নিজের আত্মাকে সুখী করে তোলার একটা সর্বোৎকৃষ্ট পথ হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবা।আপনার আশপাশের অনাথ, অসহায় ও দরিদ্র নারী-পুরুষ-শিশু আছে, যাদের মুখে হাসি ফুটে উঠতে পারে শুধু আপনার সামান্য সহযোগিতায়। সেই হাসিমাখা মুখগুলোই আপনার অন্তরকে করবে পুলকিত। আপনি হৃদয়ে অনুভব করবেন এক অজানা আনন্দ। শুধু অর্থ-সম্পদ দিয়েই স্বেচ্ছাসেবা হয় না। স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে বিপদে পড়া, অধিকারবঞ্চিত মানুষের পাশে ছায়ার মতো দাঁড়ানো হচ্ছে আসল স্বেচ্ছাসেবা।দেশে অনেক ধরনের সামাজিক সংগঠন আছে, যেগুলো কাজ করতে চায় সমাজের কল্যাণে। এর যেকোনো একটি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত হয়ে অথবা ব্যক্তিগত উদ্যোগে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা, রোগীদের রক্তদান, দরিদ্রদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা আদায়ের ব্যবস্থাকরণ, পথশিশুদের শিক্ষাসামগ্রী বিতরণ, শীতার্ত মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ, পরিবেশের সৌন্দর্য বৃদ্ধি, বৃক্ষরোপণ প্রভৃতি ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবায় কাজ করা যায়।

অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে, শুধু কি আত্মতৃপ্তির জন্যই স্বেচ্ছাসেবক হবো? তাদের জন্য উত্তর হতে পারে, একজন স্বেচ্ছাসেবক তার কাজের মাধ্যমে নিজের নেতৃত্বগুণ এবং মানুষের সঙ্গে কমিউনিকেশনের জায়গাটা উন্নত করতে পারে। আবার বর্তমানে বেশির ভাগ চাকরির ক্ষেত্রে শর্ত দেওয়া থাকে কাজের পূর্ব অভিজ্ঞতা, যা নতুনদের জন্য চাকরি পাওয়ার একটা বড় প্রতিবন্ধকতা। সে ক্ষেত্রে যেকোনো সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করলে নেতৃত্বের গুণ, ধৈর্য, উদারতা ও পরিশ্রমের মানসিকতাসহ নানা ধরনের অভিজ্ঞতার সঞ্চার হবে।স্বেচ্ছাসেবার মাধ্যমে চাকরির বাজারের পথটাও অনেকাংশে সহজ হবে। সব ধর্মের দৃষ্টিকোণ থেকেও জীবের প্রতি সেবাকে সর্বোচ্চ স্থানে রাখা হয়েছে, যা নিয়ে কোনো মতবিরোধ নেই। এ জন্য অসহায়-দুস্থ, দরিদ্র মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। মানবসেবায় আত্মনিয়োগ করা প্রতিটি মানুষের নৈতিক দায়িত্ব।আপনাকে পুরো সমাজের দায়িত্ব নেওয়ার দরকার নেই। সামর্থ্য অনুযায়ী অন্তত দু-একজনের হাতটা ধরতে চেষ্টা করুন। তার অসহায়ত্বের ছায়াকে আলোকিত করার উদ্যোগ নিন। অনেকই ভাবে, এত মানুষ থাকতে আমাকেই কেন করতে হবে এই কাজ। মনে করিয়ে দিচ্ছি প্রিয় আর পরিচিত একটি কথা- ‘আমরা যদি না জাগি মা, কেমনে সকাল হবে।আমাকে আপনাকেই জেগে উঠতে হবে। কারণ আমি-আপনিও এই সমাজেরই অংশ। আপনার, আমার সবারই চিন্তা করতে হবে সমাজের কল্যাণের। আর আপনার, আমার এই সম্মিলিত প্রচেষ্টায়ই সম্ভব একটি সুন্দর সমাজ বিনির্মাণ।মানবসেবার জন্য অনেক অর্থের প্রয়োজন হয় না। প্রয়োজন হয় শুধু বিশুদ্ধ ও উদার একটি মনের। অসহায় ও হতভাগা মানুষের প্রতি ভালোবাসার মন নিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলেই কেবল সমাজে শান্তি আসবে। আজ থেকে আমি, আপনি এবং আমরা-এই তিন শ্রেণির মানুষ যদি শপথ নিয়ে স্বেচ্ছাসেবীমূলক কার্যক্রমে অংশ নেই, তাহলেই সমাজের অসহায় মুখগুলোতে আলোর শিখা জ্বলে উঠবে। সমাজ হবে অনাবিল সুখের কেন্দ্র।

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর